প্রাকৃতিক উপায়ে মুখের ত্বকের ব্রণ ও কালো দাগ দূর করার উপায় কি?

প্রাকৃতিক উপায়ে মুখের ত্বকের ব্রণ ও কালো দাগ দূর করার উপায় কি?

পদ্ধতি-১

অনেকের মুখে দেখা যায় কালো ছোপ ছোপ দাগ যা অনেক ক্ষেত্রেই অস্বস্তির কারণ। উপায় কিন্তু আছে! মুখের এসব কালো দাগ দূর করার ৩ টি উপায় উল্লেখ করা হলোঃ ২চামচ বেসন,১ চিমটে হলুদ গুড়া,১ চামচ চন্দন গুড়া এবং ১ চামচ কমলার টা একসঙ্গে মিশিয়ে পেষ্ট তৈরী করুন।এবার এটা মুখে,ঘাড়ে লাগিয়ে রেখে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফালুন। একটি ছোট আকারের আপেল কেটে এটা মুখে,ঘাড়ে,গলায় লাগিয়ে ৪ মিনিট পর ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন।সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার। আপেল ও কমলার খোসা এক সাথে বেটে এর সংগে কাঁচা দুধ,ডিমের সাদা অংশ ও কমলা রস মেশান। এবার মিশ্রনটা ত্বকে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন।

পদ্ধতি ২

ঘরে বসে প্রাকৃতিক উপায়ে ব্রন ও মুখের কালো দাগ দূর করুনঃ ব্রন ও মুখের কালো দাগ দূর করার জন্য মানুষ কতকিছুই না করে। এই ফরমূলাটাও একবার পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। রোজ শাক-সবজি আর মওসুমী ফল খেতে হবে পর্যাপ্ত রিমানে। ২ চামচ বেসন, ১ চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা, ১ চা চামচ কমলার খোসা বাটা একসাথে মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করুন। এবার এটা মুখে, ঘাড়ে মাখিয়ে রেখে ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। আপেল এবং কমলার খোসা একসাথে বেটে এর সাথে ১ চামচ দুধ, ডিমের সাদা অংশ এবং কমলার রস মেশান। এবার মিশ্রনটা ত্বকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। পাকা পেঁপের শাঁস মুখে মেখে নিন। ১ চামচ পাকা পেঁপের শাঁস ও ১ চামচ শশার রস মুখে মেখে নিন। ত্বক উজ্জ্বল হবে। ব্রণ থাকাকালীন মুখমন্ডলের ত্বকে কোন তৈলাক্ত পদার্থ ও ক্রিম লাগাবেন না।
একটি ডিম, ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, একটি গোটা লেবুররস ভালো করে মিশিয়ে নিন, এটি নখ, গলা, হাত ও ঘাড়ের কালো ছোপে ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রণের দাগ, হাত, ঘাড়ের কালো ছোপ ইত্যাদি সেরে যাবে। আধাপাকা চিনির সাথে অলিভ অয়েল মিশিয়ে সারাগায়ে মেখে শুকাতে দিন। শুকিয়ে গেলে এটিকে ঘষে তুলে ফেলুন। এবার সামান্য গরম পানিতে ভালো করে গোসল করে নিন। সপ্তাহে একবার করবেন। এতে শরীরের ত্বক মসৃণ থাকবে। ১ চা চামচ লেবুর রস ও ১ চামচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১০-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

পদ্ধতি ৩

ভেষজ উপায়ে ত্বকের দাগ দূর করতেঃ
মুখের কালো-সাদা ছোপ ছোপ দাগ, ব্রণ বা মেছতার দাগ চেহারার সৌন্দর্য নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। আমরা নানা প্রসাধণী এবং উপকরন ব্যবহার করি এসব দাগ দূর করার জন্য। আজকে আসুন দেখে নিই মুখের দাগ দূর করার ভেষজ কিছু পদ্ধতি।
• মুখের কালো ছোপ দূর করতে ১ চা চামচ ধনিয়া পাতার রসের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে সারারাত রেখে দিন। পরদিন সকালে উঠে ঠান্ডা পানির ঝাপটায় মুখ ধুয়ে ফেলুন। কয়েকদিন ব্যবহারেই উপকার পেতে শুরু করবেন।
• যাদের মুখে মেছতার দাগ আছে তারা ১ চা চামচ সাদা জিরা গুঁড়া, ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়া, ১ চা চামচ সরিষা গুঁড়া ও ১ চা চামচ আটা মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মেছতার দাগে লাগান। বিশ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
• আপনার মুখে যদি ব্রণের দাগ থাকে, তাহলে প্রতিদিন গোলাপজল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। দেখবেন ব্রণের দাগ হালকা হয়ে যাবে।
• মুখে ক্লান্তির ছাপ পড়ে গেলে সেই ছাপ কাটাতে চন্দন বাটা, তুলশি বাটা, গোলাপজল মিশিয়ে গলায় ও মুখে লাগান। দেখবেন ত্বক উজ্জ্বল হয়ে গেছে।

মুখের ব্রণ নিয়ে ভাবছেন?


তকের যত্ন নিয়ে মহিলাদের দুঃশ্চিন্তার অন্ত নেই। সবাই চান লাবণ্যময় মসৃণ তক। বিশেষ করে মুখের ত্বকের ব্যাপারে। নো কম্প্রমাইজ। অনেকে মুখের ব্রণ নিয়েও থাকেন উদ্বিগ্ন। এখন বাংলাদেশেই ব্রণের আধুনিক চিকিৎসা হচ্ছে। সাধারণতঃ তিন ধরনের ব্রণ রয়েছে। মাইল্ড, মডারেট ও সিভিয়ার অর্থøাৎ মৃদু, মাধ্যম মাত্রার ও তীব্র ধরনের ব্রণ হতে পারে। ব্রণের চিকিৎসার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। মৃদু ধরণের ব্রণের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মুখে ওষুধ ব্যবহার করলেই চলে। মধ্যম ধরনের ব্রণের ক্ষেত্রে মুখে ওষুধ ব্যবহার এবং উপযুক্ত এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করলেই চলে। তবে তীব্র ধরনের ব্রণের (Nodulocystic acne) ক্ষেত্রে সনাতনী চিকিৎসা যেমনঃ টপিক্যাল ক্রীম, মুখে এন্টিবায়োটিকসহ অন্যান্য ওষুধ ব্যবহার করা যায়। তবে অপ্রচলিত ওষুধের মধ্যে রয়েছে আইসোটেরিটিনয়েন এবং অন্যান্য ওষুধ।
তবে মুখের ব্রণ কখনও নিজের ইচ্ছামত চিকিৎসা করা ঠিক নয়। সঠিক প্রটোকল অনুযায়ী চিকিৎসা না দিলে ব্রণ বা একনি আপর হতে পারে। আমাদের দেশে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এক মাসের চিকিৎসায় একনি ভালো হলে ওষুধ বন্ধ করে দেয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে একনির ধরন অনুযায়ী ওষুধের মাত্রা নির্ধারণ করা হয় না। তাই একনি বা ব্রণ সম্পূর্ণ নিরাময় করতে হলে অবশ্যই উপযুক্ত-মাত্রার ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।

ডাঃ মোড়ল নজরুল ইসলাম
চুলপড়া, যৌন সমস্যা ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ
এবং লেজার এন্ড কসমেটিক্স সার্জন
দৈনিক ইত্তেফাক, ০৫ এপ্রিল ২০০৮